বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা বুঝতে পারছি না: জিএম কাদের

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা বুঝতে পারছি না: জিএম কাদের

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা বুঝতে পারছি না: জিএম কাদের

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা বুঝতে পারছি না: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। সামনে নির্বাচন। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারছি না। নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে কিনা, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা তা বুঝতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও বেশি নাজুক। প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। আমদানি ব্যয় বাড়ছে, রিজার্ভ কমে আসছে, সেখানে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের যে ঋণ তার বোঝা দেশ কতটুকু বইতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি। আগেও বলেছি, দেশ দেউলিয়া হওয়ার পথে। আমাদের অবস্থা শ্রীলংকার মতো হতে পারে।

সোমবার দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় পাঁচ দিনের সফরে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জিএম কাদের।

সেখানে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে বিশাল গাড়ি নিয়ে সড়কপথে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় তারাগঞ্জ, পাগলাপীরসহ পথে পথে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

দলের একাধিক নেতাকে বহিষ্কার ও রওশন এরশাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো ভাঙন নেই। জাতীয় পার্টি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ দল। দেশে এবং বিদেশে এ বিষয়টি সবাই লক্ষ করছে। সব রাজনৈতিক দল এবং বিদেশি শক্তিও আমাদের দিকে খেয়াল রাখছে। আমরা যা কিছু করছি দেশ ও জনগণের স্বার্থে করছি।

এ সময় তিনি রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্তমান মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে আসন্ন নির্বাচনে আবারও মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘একটা দলে অনেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর মধ্য থেকে আমরা একজনকে বেছে নিই। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। লাঙ্গল প্রতীক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার। অন্য কারও দাবি করার সুযোগ নেই।

জিএম কাদের আরও বলেন, আমি সব সময়ই সংসদে এবং সংসদের বাইরে বলে আসছি এই সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। সরকার সুশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা আমাদের আপত্তি জানিয়েছি। দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেবে, দুর্নীতি দূর হবে, অন্যায়-অবিচার, জুলুম থাকবে না। এমনটা ভেবেই আমরা সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় এসে যা করছে তা বিএনপির চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি। আমরা হতাশ, আমরা এর পরিবর্তন চাই।

নির্বাচনে জোট গঠনের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটার ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতির অস্তিত্ব নির্ভর করছে। তাই তৃণমূল থেকে দলের উচ্চপর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিএনপির সঙ্গে গোপন আঁতাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা গোপন কোনো আঁতাত করি না, যা কিছু হবে স্বচ্ছ।’

এরশাদের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ‘এরশাদের শাসনামলে এসব ছিল না। সংখ্যালঘুরা ভালো ছিল। দেশে সুশাসন ছিল। দুর্নীতি কম ছিল। আমরা তেমন সুশাসন নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান আদেল এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক সাবেক এমপি আসিফ শাহরিয়ার, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।

এ সময় কেন্দ্রীয়, রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর সার্কিট হাউজ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রংপুর নগরীর দর্শনাস্থ পল্লি নিবাসে যান জিএম কাদের। সেখানে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন।

বিকালে নগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে যৌথ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

সম্পর্কিত খবর

বাংলার শিরোনাম ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সর্বশেষ সংবাদ